মানুষকে মানুষ ভাবুন!

মানুষ বলতে আপনারা কি বুঝেন? দুইটা হাত, দুইটা পা, দুইটা চোখ, একটা নাক, বত্রিশটা দাঁত, এইতো? ওহ, না না! লিঙ্গের ও তো একটা বিষয় থাকে। এসবের সাথে মানুষ হতে হলে আপনার হয়তোবা ছেলে, অথবা মেয়ে হতে হবে। এবং, ছেলেদের অবশ্যই মেয়েদের প্রতি আকর্ষণ থাকতে হবে, এবং মেয়েদের অবশ্যই ছেলেদের প্রতি আকর্ষণ থাকতে হবে! অতশত বুঝি না। বুঝবেন কিভাবে? যার প্রার্থনা করেন, টাকা-পয়সার পাশাপাশি একটু বুদ্ধি কিংবা সামান্য একটু মগজ চাইতে এক দুই মিনিট খসাতে খুব কষ্ট লাগে? যে সময়টুকু মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণে সময় দিচ্ছেন, সে সময়টুকু নিজের সন্তানের একটি বিজ্ঞান বই-য়ে দিয়ে দেখেন, চিন্তাভাবনা বদলাবে, নিজে শান্তি পাবেন, সমাজকে শান্তি দিতে পারবেন।

আসল কথায় আসি। যেহুতু আপনারা নিজেদের মানুষ বলে দাবি করেন, আমার বা অন্য কারো থেকে আপনিই ভালো জানেন, মানুষ মাত্রই স্বাধীন। প্রত্যেকটি মানুষের নিজস্ব অধিকার আছে , এ অধিকার লঙ্ঘন করতে আপনি কে? এই যে আপনি একজন কে অকথ্য ভাষায় গালি দিলেন কিংবা সমাজ থেকে বিতাড়িত করলেন শুধু মাত্র সে সমকামী বা উভকামী তাই। সে কি কোন উপায়ে আপনার উপর দায়বদ্ধ? একটু ভেবে দেখেন তো? আপনার মতন সেও কারো ভাই, কারো সন্তান। আপনার বেঁচে থাকার জন্য চাকুরী দরকার, অর্থ দরকার, তার কি সেটা দরকার নেই? আপনার জীবনের নিজস্ব বিষয় আপনি কি সবাই কে বলেন? কয়জন আপনার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলে? তাহলে আপনিই বা কেন বলতে আসেন? তার যৌন চাহিদা নিয়ে আপনার কিসের কিংবা কেন মাথাব্যথা থাকবে? এ সহজ প্রশ্নের সত্য উত্তর কেউ দিতে পারে না, কিংবা পারলেও, দিতে চায় না। হ্যাঁ, এর নামই সমাজ। ধিক্কার জানাই এই সমাজ ব্যবস্থাকে।

একটি বিষয় নিয়ে প্রায় প্রায়ই চিন্তা করি। অপরাধ বলতে আমরা কি বুঝি? অপরাধ বলতে আমরা বুঝি যে, সমাজের নিয়মকানুন ভেঙ্গে কোন কিছুর কিংবা কারো ক্ষতিসাধন করা, এইতো? এক কথায়, কারো ক্ষতি করা। আচ্ছা, এইবার আমাকে একটু বুঝান, এই যে আপনারা বারবার বলেন যে সমকামী বা উভকামী হওয়া যে অপরাধ, কিভাবে সেটা? সে কার ক্ষতি করেছে? সমাজের কিভাবে ক্ষতি হচ্ছে তার এমন হওয়ায়? বলতে পারবেন কি? পারবেন না! না পারারই কথা। কারণ পারলে আমার এ লিখার কোন প্রয়োজন আসতো না আজ। যদি অপরাধ এর সংজ্ঞা আমি ঠিক বলে থাকি, এবার আমার জায়গায় থেকে আপনারা বলেন, অপরাধী কি আপনারাই না? আপনারা প্রতিনিয়ত এই মানুষগুলোর প্রতি অন্যায় করছেন, এদের অবমাননা করছেন, এদের স্বীকৃত দিচ্ছেন না, এদের নিরাপত্তা তো দিচ্ছেন ই না, উল্টো এদের জীবনের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছেন। চমৎকার!

লালন শাহ্‌ এর “মানবধর্ম” কবিতা অনেক ছোটবেলায় পড়েছিলাম। আমার ধারণা, বেশিরভাগ মানুষের এই ছোট্ট কবিতার কথা জানা রয়েছে। হয় নিজে পড়েছে, নাহয় সন্তানকে পড়িয়েছে। সব কাজে আপনারা মানবধর্ম দেখান, এই বিষয়ে আপনাদের এ ধর্ম কথায় যায়? প্রত্যেকটা মানুষের নিজস্ব মন-মানসিকতা রয়েছে। আপনি কারো লিঙ্গের দিক প্রদর্শনকারী নন। সাহায্যের নামে অথবা উপকারের নামে কারো জীবন নষ্টের কারণ হতে যাবেন না। আমি আগেও বলেছি, আমি আবার ও বলবো। কারো জীবননাশের কারণ না হয়ে, কারো বিপদের লাঠি হন, তাকে উঠতে সহায়তা করুন। কার মনের ভিতর কি চলছে, সেটা সে ছাড়া কেউ জানেন না। কাজেই, হয় উপকারে আসুন, নাহলে তার রাস্তা ছেড়ে দিন। নিজের সন্তানের বিজ্ঞান বইটি নিয়ে প্রতিদিন ৫ মিনিট সময় দিন। সন্তানরা সব বড় থাকলে, নিকটস্থ গ্রন্থাগার থেকে ক্লাস ৬ এর “সাধারণ বিজ্ঞান” বইটা ক্রয় করুন। এই বইটি আপনাদের যে কি প্রয়োজন, তা আপনাদের জানা নেই। ভালো থাকবেন।

11 Responses

  1. নাস্তিকরা সবসময় সরকারে আইনের বিরুদ্ধে থাকে।

  2. নাস্তিক কুলাংগার বাচ্চাদের আমি ঘৃণা করি

  3. নাস্তিক কুলাংগার বাচ্চাকে আইনের বিধি লংগন করেছে।

  4. নাস্তিক ব্লগাররা আইনের প্রতি তারা শ্রদ্ধাশীল নয়।

  5. চুতমারানির পোলা কি লিখিস এসব?

  6. নাস্তিক ব্লগাররা বাংলাদেশের কোনও আইনকে তারা শ্রদ্ধা করে না।

  7. এই নাস্তিক এর বাচ্চা পুলিশ বাহীনিকে পেটুয়া বাহীনি বলার সাহস তোর কোথায় থেকে হয়।

  8. আমি সিদ্দিকুর এর চোখ যাওয়ায় আমি সমবেদনা জানাই এবং দুখ প্রকাশ করছি কিন্তু পুলিশ বাহীনির নামে তোর এই ব্যাক্তব্য মেনে নেওয়া যায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *